কোষবিদ্যা ০৩: প্রোক্যারিওটিক কোষ
প্রোক্যারিওটিক কোষ বলতে কী বুঝ?
প্রোক্যারিটিক কোষ হলো একক কোষ দিয়ে গঠিত ক্ষুদ্রজীব যাদেরকে পৃথিবীর সবচেয়ে আদি জীব বলে বিবেচনা করা হয়। প্রোক্যারিওটিক জীবের মধ্যে ব্যাকটেরিয়া ও আর্কিয়া অন্যতম। কিছু কিছু প্রোক্যারিওটিক জীবে সালোকসংশ্লেষণ ঘটে। যেমন, সায়ানোব্যাকটেরিয়া, এরা সালোকসংশ্লেষণ প্রক্রিয়ায় খাদ্য উৎপাদন করতে পারে।
প্রোক্যারিওটিক কোষের একটিমাত্র মেমব্রেন দিয়ে আবৃত। এর আবরণের মধ্যকার সাইটোপ্লাজমে সকল প্রকার ক্রিয়া সংঘটিত হয়। প্রোক্যারিওটিক কোষ পরজীবী বা মুক্তভাবে বিচরণ করতে পারে।
প্রোক্যারিওটিক কোষের বৈশিষ্ট্যঃ
আদি কোষ হিসেবে প্রোক্যারিওটিক কোষ বহুবিধ বৈশিষ্ট্য প্রদর্শন করে। তার মধ্যে অন্যতম:-
১) এদের নিউক্লিয়ার মেমব্রেন নেই।
২) মাইটোকন্ড্রিয়া, গলজি বস্তু, ক্লোরোপ্লাস্ট ও লাইসোসোম অনুপস্থিত
৩) একটি একক ক্রোমোসোমে জেনেটিক উপাদান থাকে।
৪) হিস্টোন প্রোটিন (ইউক্যারিওটিক ক্রোমোসোমের গুরুত্বপূর্ণ উপাদান) অনুপস্থিত
৫) কার্বোহাইড্রেট ও অ্যামাইনো এসিড দিয়ে কোষ প্রাচীর গঠিত
৬) প্লাজমামেমব্রেন মাইটোকন্ড্রিয়ার মেমব্রেনের ন্যায় কাজ করে, এটি শ্বসনের জন্য প্রয়োজনীয় এনজাইম ধারণ করে
৭) সাধারণত বাইনারি ফিশন প্রক্রিয়ায় অযৌন প্রজনন ঘটে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে যৌন প্রজনন দেখা দেয়। এই প্রকৃতির যৌন প্রজনন কনজুগেশন যা প্রোক্যারিটিক জীবের প্রজননে দেখা যায়।
প্রোক্যারিওটিক কোষের সাধারণ গঠন
সরল প্রকৃতির কোষ হিসেবে প্রোক্যারিওটিক কোষে বেশ কিছু উপাদান থাকে। একটি প্রোক্যারিওটিক কোষকে অণুবীক্ষণ যন্ত্রে দেখলে নিম্নোক্ত উপাদান দেখা যায়:
- নিউক্লিয়েড (Nucleoid): কোষের কেন্দ্রীয় অঞ্চল যেখানে ডিএনএ থাকে।
- রাইবোসোম (Ribosome): প্রোটিন সংশ্লেষণ ঘটায়
- কোষ প্রাচীর (Cell wall): কোষ প্রাচীর কোষের নির্দিষ্ট আকার প্রদান করে এবং বাইরের পরিবেশ থেকে কোষকে রক্ষা করে।অধিকাংশ ব্যাকটেরিয়াতে কার্বোহাইড্রেট ও প্রোটিন দিয়ে গঠিত দৃঢ় কোষ প্রাচীর থাকে যা পেপটিডোগ্লাইস্যান (peptidoglycans) নামে পরিচিত।
- কোষীয় মেমব্রেন (Cell membrane): প্রতিটি প্রোক্যারিওিটিক কোষে মেমব্রেন ধাকে যা প্লাজমেমব্রেন নামে পরিচিত। এটি বাইরের পরিবেশ থেকে কোষকে আলাদা রাখে।
- ক্যাপসুল (Capsule): কিছু ব্যাকটেরিয়ার কোষ প্রাচীরের বাইরে কার্বোহাইড্রেটের স্তর দিয়ে আবৃত থাকে যাকে ক্যাপসুল বলে।এটি বাহ্যিক কোসো স্তরের সাথে ব্যাকটেরিয়ামকে যুক্ত রাখে।
- ফিমব্রে (Fimbriae): ফিমব্রে পাতলা, চুলের মতো গাঠনিক উপাদান যা কোষকে যুক্ত রাখতে সাহায্য করে
- পিলি (Pili): পিলির গঠন রডের মতো। এটি বুহবিধ কাজের সাথে যুক্ত। এর মধ্যে অন্যতম হলো কোষকে যুক্ত রাখা, ডিএন ট্রান্সফার করা।
- ফ্ল্যাজেলা (Flagella): পাতলা, লেজের মতো গঠন। এটি কোষের চলনে সহায়তা করে।
প্রোক্যারিওটিকের প্রজনন
একটি প্রোক্যারিওটিকে দুইভাবে প্রজনন ঘটে থাকে:-
Ø অযৌন: বাইনারি ফিশন প্রক্রিয়ায়
Ø যৌন: কনজুগেশন প্রক্রিয়ায়
বাইনারি ফিশন
১) বাইনারি ফিশন প্রক্রিয়ায় জীবের ডিএনএ বিভক্ত হয় এবং অপত্য ডিএনএ কোষ মেমব্রেনের সাথে যুক্ত থাকে।
২) কোষ প্রাচীরের আকার বৃদ্ধি পায় এবং ভিতরের দিকে প্রবৃদ্ধি ঘটে।
৩) এরপর অপত্য দুইটি ডিএনএর মধ্যবর্তী স্থানে কোষ প্রাচীর উৎপন্ন হয়, একটি কোষ থেকে দুইটি নতুন কোষ উৎপন্ন হয়।
রিকম্বিনেশন (Recombination)
এই প্রক্রিয়ায়, কোনো একটি ব্যাকটেরিয়ার জীন অন্য ব্যাকটেরিয়ার জিনোমে রূপান্তরিত হয়। রিকম্বিনেশন প্রক্রিয়ায় তিন ধাপে সম্পন্ন হয়: কনজুগেশন (conjugation), ট্রান্সফরমেশন (transformation), ট্রান্সডাকশন (transduction)।
কনজুগেশন (conjugation): এই প্রক্রিয়ায় দুইটি ব্যাকটেরিয়ার মধ্যে জীন ট্রান্সফার হয়। পাইলাস (pilus) নামক এক প্রকার প্রোটিন টিউবের মধ্য দিয়ে এই রূপান্তর প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়।
ট্রান্সফরমেশন (transformation): এটি এক প্রকার যৌন প্রজনন (sexual reproduction) প্রক্রিয়া। এক্ষেত্রে ব্যাকটেরিয়া কোষ প্বার্শ্ববর্তী ডিএনএ গ্রহণ করে নিজ ডিএনএর সাথে যুক্ত করে।
ট্রান্সডাকশন (transduction): এই ধাপে ভাইরাসের সহযোগিতায় ব্যাকটেরিয়ার কোষে জেনেটিক ম্যাটেরিয়াল পরিবাহিত হয়। ব্যাকটেরিয়াফেজ হলো ভাইরাস যা এই প্রক্রিয়া শুরু করে।
প্রোক্যারিওটিক কোষের উদাহরণ:
ব্যাকটেরিয়ার কোষ
Ø এককোষী জীব যা মাটি থেকে শুরু করে মানবদেহ তথা সমগ্র পৃথিবীতে পাওয়া যায়।
Ø এদের গঠন ও আকৃতি ভিন্ন ভিন্ন হয়ে থাকে
Ø এদের কোষপ্রাচীর পেপটিডোগ্লাইক্যান দিয়ে গঠিত যা দিয়ে কোষ প্রাচীরের আকার গঠিত হয়।
Ø ব্যাকটেরিয়ার কিছু স্বতন্ত্র গাঠনিক উপাদান আছে। যেমন, পিলি, ফ্ল্যাজেলা, ক্যাপসুল
Ø তাদের দেহে প্লাজমিড থাকে
Ø তারা দৃঢ় ও সুপ্ত কাঠামো গঠন করতে পারে যা এন্ডোস্পোর নামে পরিচিত। মূলত প্রতিকূল পরিবেশে টিকে থাকার জন্য ব্যাকটেরিয়া এই গঠন লাভ করে। অনুকূল পরিবেশে আবার এন্ডাস্পোর সক্রিয় হয়।
আর্কিয়া কোষ
Ø ১) আর্কিয়া এক প্রকার এককোষী অনুজীব। গঠন ও আকারে ব্যাকটেরিয়ার অনুরূপ।
Ø ২) চরমাভাবাপন্ন আবহাওয়ায় এদের পাওয়া যায়।মাটি, জলাভূমি, এমনকি মানব দেহে এরা বাস করে।
Ø ৩) তাদের একটি কোষ প্রাচীর ও ফ্লাজেলা আছে। তবে আর্কিয়ার কোষ প্রাচীর ব্যাকটেরিয়ার মতো পেপটিডোগ্লাইক্যান দিয়ে গঠিত নয়।
Ø ৪) আর্কিয়ার মেমব্রেনে বিভিন্ন প্রকার লিপিড থাকে। এমনকি এদের মেমব্রেনে অণুসমূহের ত্রিমাত্রিক বিন্যাস সম্পূর্ণ ভিন্ন।
Ø ৫) ব্যাকটেরিয়ার মতো আর্কিয়ার একটি বৃত্তাকার ক্রোমোসোম আছে। এরা প্লাজমিড ধারণ করে।
ব্যাকটেরিয়া, একটি সাধারণ আদিকোষী জীব
ব্যাকটেরিয়া এককোষী জীব। স্থল,জলজ, শুষ্ক থেকে আর্দ্র, মানুষের দেহ এমনকি হাতের মুঠোতে ব্যাকটেরিয়া বাস করে। ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া থাকলেও ব্যাকটেরিয়া মানুষের জন্য অনেক উপকারী কাজ করে থাকে।
ব্যাকটেরিয়া কী?
ব্যাকটরেয়ার দেহ একটিমাত্র কোষ দিয়ে গঠিত। এই কোষ আদি প্রকৃতির অর্থাৎ সরল বৈশিষ্ট্য প্রদর্শন করে। মানুষের দেহে সুকেন্দ্রীক বা ইউক্যারিওটিক কোষ দিয়ে গঠিত। সুকেন্দ্রীক কোষে সুগঠিত মেমব্রেনে আবৃত নিউক্লিয়াস থাকে। অন্যদিকে ব্যাকটেরিয়া কোষে সুগঠিত নিউক্লিয়াস থাকে না। প্রোক্যারিওটিক ও ইউক্যারিওটিক কোষের তুলনা করলে বিষয়টি আমাদের কাছে স্পষ্ট হবে।
ব্যাকটেরিয়া কোষের গঠন
১) ক্যাপসুল
· কিছু কিছু ব্যাকটেরিয়া কোষে পলিস্যাকারাইড দিয়ে গঠিত ক্যাপসুল থাকে। এটি মূলত ব্যাকটেরিয়ার তৃতীয় প্রতিরক্ষা বলয় হিসেবে বিবেচিত হয়।
· ক্যাপসুল বহুবিধ কাজের সাথে জড়িত। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো:-ক) এটি ব্যাকটেরিয়াকে শুষ্ক হওয়া থেকে রক্ষা করে খ) ফ্যাগাসাইটোসিস প্রক্রিয়া বৃহৎ জীব কর্তৃক ব্যাকটেরিয়া ভক্ষণ হওয়া থেকে রক্ষা করে।
· এছাড়াও প্রধান রোগসৃষ্টিকারী ব্যাকটেরিয়ার ভাইরুলেন্স ফ্যাক্টর হিসেবে ক্যাপসুল কাজ করে। বিশেষ করে Escherichia coli ও Streptococcus pneumoniae.
২) কোষ গহ্বর
· কিছু কিছু ভাইরাস কোষে ক্ষুদ্রকার কোষ গহবর দেখা যায়। এটি তিন স্তরে বিভক্ত: অভ্যন্তরিন সাইটোপ্লাজমিক মেমব্রেন, কোষ প্রাচীর এবং কিছু ব্যাকটেরিয়া প্রজাতির বহিস্থ ক্যাপসুল।
৩) কোষ প্রাচীর
· প্রতি ব্যাকটেরিয়াম শক্ত প্রাচীর দিয়ে আবৃত থাকে। এই প্রাচীর পেপটিডোগ্লাইক্যান দিয়ে গঠিত। এটি এক প্রকার শর্করা উপাদান।
· এটি ব্যাকটেরিয়াকে দৃঢ়তা প্রদান করে। বাইরের পরিবেশ থেকে ব্যাকটেরিয়া কোষকে রক্ষা করে।
· এটি পিলি ও ফ্ল্যাজেলার মতো উপাঙ্গকে ঝুলে থাকতে সহায়তা করে। সাধারণত এই সকল উপাঙ্গ সাইটোপ্লাজম মেমব্রেন থেকে উৎপন্ন হয়ে কোষ দেহের বাইরে বিস্তৃত থাকে।
· সাইটোপ্লাজম ও বাহ্যিক পরিবেশের মধ্যকার অসমোটিক চাপের ব্যবধান বেশি হলে ব্যাকটেরিয়ার দেহ বিস্ফোরিত হওয়া থেকে রক্ষা করে।
৪) সাইটোপ্লাজম
· ব্যাকটেরিয়ার সাইটোপ্লাজমে এই বৃদ্ধি, বিপাক ক্রিয়া ও এর প্রতিলিপি উৎপন্ন হয়।
· এটি পানি, এনজাইম, পুষ্টি উপাদান, বর্জ্য পদার্থ ও গ্যাসীয় উপাদান দিয়ে গঠিত জেলির ন্যায় মেট্রিক্স গঠন। সাইটোপ্লাজমে রাইবোসোম, ক্রোমোসোম ও প্লাজমিড থাকে।
· জেনেটিক তথ্য ধারণকারী নিউক্লিয়েড থাকে। ব্যাকটেরিয়াতে কোনো সুগঠিত নিউক্লিয়াস থাকে না।
৫) সাইটোপ্লাজমিক মেমব্রেন
· ব্যাকটেরিয়া কোষের সাইটোপ্রাজমকে একটি পাতলা পর্দা আবৃত করে রাখে যা সাইটোপ্লাজমিক মেমব্রেন নামে পরিচিত। এটি ফসপোলিপিড ও প্রোটিন দিয়ে তৈরী। কোষের ভিতরে ও বাইরে বিভিন্ন পদার্থের পরিবহন নিয়ন্ত্রণ করে।
৬) নিউক্লিয়েড
· এটি সাইটোপ্লাজমের একটি অঞ্চল যেখানে ক্রোমোসোমাল ডিএনএ থাকে।
· এটি কোনো মেমব্রেন আবৃত নিউক্লিয়াস নয়। বরং সাইটোপ্লাজমের একটি নির্দিষ্ট স্থান যেখানে ডিএনএ থাকে।
· অধিকাংশ ব্যাকটেরিয়ায় একক, বৃত্তাকার ক্রোমোসোম থাকে যা ব্যাকটিরায় প্রতিলিপি সৃষ্টি করে।
৭) ফ্ল্যাজেলা
· ব্যাকটেরিয়ার দেহের চুলের মতো এক প্রকার ফ্ল্যাজেলা নামক উপাঙ্গ থাকে। এটি ব্যাকটেরিয়াকে চলাচলে সহায়তা করে।
· ব্যাকটেরিয়ার দেহের প্রান্তভাগে বা কো কোনো ব্যাকটেরিয়ার পুরো পুষ্টতলে ফ্ল্যাজেলা দেখা যায়।
· এটা ব্যাকটেরিয়াকে পুষ্টি উপাদানের দিকে বা ক্ষতিকর রাসায়নিক উপাদান থেকে দুরে পালাতে বা সালোকসংশ্লেষী ব্যাকটেরিয়ার ক্ষেত্রে আলোক উজ্জ্বল পরিবেশে যেতে সহায়তা করে।
৮) পিলি
· ব্যাকটেরিয়ার অনেক প্রজাতিতে পিলি নামক ক্ষুদ্র সূতার মতো উপাঙ্গ থাকে। এটি কোষীয় পৃষ্টের বাইরে থেকে উৎপন্ন হয়।
· এটি ব্যাকটেরিয়াকে অন্য কোষ বা তলের সাথে আটকে রাখতে সাহায্য করে।
· পিলি না থাকলে অনেক রোগসৃষ্টিকারী ব্যকটেরিয়া রোগ সৃষ্টির ক্ষমতা হারিয়ে ফেলে। কারণ তারা পোষক টিস্যুর সাথে আটকে থাকতে পারে না।
· কনজুগেশন প্রক্রিয়ায় পিলি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কারণ এই সময়ে দুইটি ব্যাকটিরিয়া প্লাজমিড ডিএনএ খন্ড আদান প্রদান করে।
৯) রাইবোসোম
· ব্যাকটেরিয়ার সাইটোপ্লাজমে রাইবোসোম থাকে যা প্রোটিন ফ্যাক্টরি।
· এটি নিউক্লিক এসিড নির্দেশিত জেনেটিক কোড অনুযায়ী প্রোটিন তৈরীর একক অ্যামাইনো এসিড প্রস্তুত করে। অ্যামাইনো এসিড পরস্পরের সাথে যুক্ত হয়ে প্রোটিন উৎপাদন করে।
· ইউক্যারিওটিক কোষের সাথে প্রোক্যারিওটিক কোষের রাইবোসোমে কিছুটা মিল আছে। তবে ব্যাকটেরিয়ার রাইবোসোম আকারে ছোট এবং গঠন ও উপাদান বিবেচনায় ভিন্ন।
· ব্যাকটেরিয়ার রাইবোসোম মুক্তভাবে সাইটোপ্লাজমে বিচরণ করে।
বিভিন্ন প্রকার ব্যাকটেরিয়া
প্রকৃতিতে বিভিন্ন প্রকার ব্যাকটেরিয়া বাস করে। তন্মাধ্যে কয়েকটি ব্যাকটেরিয়া সম্পর্কে সংক্ষেপে আলোচনা করা হলো।
Ø Bifidobacterium :এটি এক প্রকার গ্রাম পজিটিভ ব্যাকটিরিয়া। এই ব্যাসিলি সাধারণত প্রোবায়োটিক। কোনো রোগ সৃষ্টি করে না।
Ø Escherichia coli: এসচেরিকিয়া কোলাই হল এক ধরনের গ্রাম নেগেটিভ ব্যাকটেরিয়া, সহবাসী প্যাথোজেন যা মানুষ ও পশুদের অন্ত্রে থাকে। মানুষের অন্ত্রে একটি জাত বাস করে যা ভিটামিন কে২ উৎপাদনে সহায়তা করে। তবে এর বেশ কিছু জাত খাদ্য বিষক্রিয়ার জন্য দায়ী।
Ø Lactobacillus acidophilus: Lactobacillus গ্রাম পজিটিভ ব্যাকটেরিয়া। এটি মানুষ ও অন্যান্য প্রাণীর অন্ত্রে বাস করে। এটি একটি উপকারী ব্যাকটেরিয়া। খাদ্য ভেঙে সরল উপাদানে রূপান্তর করতে সহায়তা করে। এটি খাদ্য থেকে প্রয়োজনীয় পুষ্টি শোষণ করে। অনেকসময় ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়াকে প্রতিহত করে।
Ø Pseudomonas aeruginosa: P. aeruginosa ক্যাপসুল উৎপন্নকারী, গ্রাম নেগেটিভ ব্যাকটেরিয়া। সাধারণত ত্বক, পানি, মাটি ও ভূপৃষ্টে পাওয়া যায়। এটি সাধারণত সংক্রামক জীবাণু হিসেবে পরিচিত।
Ø Staphylococcus aureus: S. aureus গ্রাম নেগেটিভ ব্যাকটেরিয়া। এটি মানুষের ত্বকে বাস করে এবং বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ করে। তবে এর কিছু জাত উচ্চ-তাপমাত্রার প্রোটিন টক্সিন তৈরি করে, মানুষের মধ্যে রোগ সৃষ্টি করে।
Ø Streptococcus mutans: S. mutans গ্রাম নেগেটিভ ব্যাকটেরিয়া। এই প্রজাতির ব্যাকটেরিয়া মানুষের মুখে বাস করে এবং দাঁত ক্ষয় রোগ সষ্টি করে।
সম্পাদনাঃ রফিকুল ইসলাম, প্রশিক্ষণ সমন্বয়ক, বায়োলজি স্কুল