কৃষকের গোলা ভরাবে ব্রি ধান ১০২
কৃষি প্রধান বাংলাদেশের সমৃদ্ধি কৃষি ও কৃষক ব্যাতীত সম্ভব নয়। ফলে প্রতিনিয়ত নতুন নতুন ফসল ও প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে এগিয়ে যাচ্ছে কৃষি। একদিকে নতুন প্রযুক্তির সম্প্রসারণ , অন্যদিকে নতুন নতুন জাত উদ্ভাবন আমাদের আগামী সম্ভাবনাকে সমৃদ্ধ করছে। আমাদের দেশে যে সকল ফসল আবাদ হয় তার মধ্যে ধান অন্যতম। আমাদের খাদ্যাভ্যাস প্রধান হওয়ায় ধান আবাদ বেশি হয়ে থাকে। ফলে ধান বিজ্ঞানীরা নতুন নতুন জাত উদ্ভাবন করছেন যেন ধানের ফলন বেশি হয় ও আমরা খাদ্যে স্বয়ংষম্পূর্ণ থাকি। বাংলাদেশের ধান গবেষণার প্রসিদ্ধ প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ ধান গবেষণা প্রতিষ্ঠানের উদ্ভাবিত একটি জাত ব্রি ধান ১০২। বোরো মৌসুমে আবাদ উপযোগী ধানটি জিংক সমৃদ্ধ। এই ধানের ভাত খাওয়ার ফলে মানুষের দেহে জিংকের ঘাটতি নিরাময় হবে। ধানটির কৌলিক সারি বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের গবেষণা মাঠে চার বছর ফলন পরীক্ষা করা হয়। এরপর ২০১৯ সালে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে আবাদ করে চূড়ান্ত ফলাফল পরীক্ষা করা হয়। অতঃপর ১৮ জানুয়ারি ২০২২ খ্রি. জাতীয় বীজ বোর্ডের ১০৬ তম সভায় এ জাতটিকে জিংক সমৃদ্ধ জাত হিসেবে দেশজুড়ে চাষাবাদের জন্য অনুমোদন দেওয়া হয়।
জাতের বৈশিষ্ট্য
১) বোরো মৌসেুমে আবাদ উপযোগী।
২) আধুনিক উফসী ধানের সকল বৈশিষ্ট্য বিদ্যমান।
৩) অঙ্গজ অবস্থায় গাছের আকার আকৃতি ব্রি ধান ২৯ এর মতো।
৪) ডিগ পাতা খাড়া, প্রশস্থ ও লম্বা এবং পাতার রং সবুজ।
৫) পূর্ণবয়স্ক গাছের উচ্চতা ১০৩ সে.মি.।
৬) ১০০০ টি পুষ্ট ধানের ওজন ২২.৭ গ্রাম।
৭) ধানের দানার রঙ খড়ের মতো।
৮) চাল লম্বা, চিকন ও সাদা।
৯) জিংকের পরিমাণ ২৫.৫ মিলিগ্রাম/কে.জি.।
১০) চালে অ্যামাইলেজ ২৮% এবং প্রোটিনের পরিমাণ ৭.৫%
১১) জীবনকাল ব্রি ধান ২৯ এর চেয়ে দুই দিন কম এবং গড় ফলন ব্রি ধান ২৯ অপেক্ষা বেশি।
জীবনকালঃ এ জাতের গড় জীবনকাল ১৫০ দিন।
ফলনঃ ব্রি ধান ১০২ এর ফলন হেক্টর প্রতি ৮.১০ টন, তবে উপযুক্ত পরিচর্যা পেলে হেক্টরপ্রতি ৯.৬০ টন ফলন দিতে সক্ষম।
সূত্রঃ বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট