-->

শিশু ও গর্ভবতী নারীদের পুষ্টি চাহিদা মেটাবে স্পাইরুলিনা শৈবাল


                                                   
স্পাইরুলিনা নামক অত্যন্ত সুপরিচিত উচ্চ আমিষ সমৃদ্ধ এক প্রকার বহুকোষী নীলাভ সবুজ শৈবাল। স্পাইরুলিনা মৎস্য চাষ, একুরিয়াম এবং পোল্ট্রি শিল্পে সম্পূরক খাবার হিসেবে বিশ্বব্যাপি সমাদৃত।  ইতোমধ্যে জাতিসংঘ এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা স্পাইরিুলনাকে শিশুদের জন্য একটি নিরাপদ খাদ্য হিসেবে সুপারিশ করেছে। স্পাইরুলিনাতে বিদ্যমান ভিটামিন বি-১২ এর পরিমান প্রাণীজ কলিজা থেকে তিনগুন বেশী। বিদ্যমান পলিস্যাকারাইড মজ্জা কোষের সংখ্যা বাড়িয়ে ইমিউন সিস্টেমকে উন্নত করে। স্পাইরুলিনতে গামা লিনোলেনিক এসিড বিদ্যমান যা  মানুষের যকৃতকে রক্ষা করে। এছাড়াও দৃষ্টিশক্তি জনিত সমস্যা সমাধানে স্পাইরুলিনা বেশ কার্যকর। লালশাক অপেক্ষা ৪৫ গুন বেশী আয়রন সমৃদ্ধ এবং সাধারণ সবজি থেকে ১০ গুন বেশী ক্লোরোফিল সমৃদ্ধ। নবজাতক এবং শিশুদের অপুষ্টিজনিত সমস্য সমাধানে এটি বেশ কার্যকর। গর্ভবতী ও দুগ্ধবতী নারীদের পুষ্টি চাহিদা পূরনেও বেশ উপকারী। এতে ভিটামিন বি-১, বি-২, বি-৬, বি-১২, ভিটামিন ই, খনিজ পদার্থসহ প্রয়োজনীয় ফ্যাটি এসিড বিদ্যমান। স্পাইরুলিনাতে আমিষের পরিমাণ শতকরা ৬৫-৭৭ ভাগ এবং আয়রনের পরিমান লালশাক ও গরুর কলিজা হতে যথাক্রমে প্রায় ৫৮ গুণ এবং ২৮ গুণ বেশী। ক্লোরোফিলের পরিমাণ সবুজ গমগাছ ও আলফালফা থেকে অনেক গুণ বেশী। বিশ্বের প্রায় ৭০ টি দেশের জনগণ আমিষ ও আয়রনের চাহিদা পূরণে এই শৈবাল ভক্ষণ করে থাকে।  গত ৮০-৯০ দশকে নাসা এবং ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সি স্পাইরিুলনাকে দীর্ঘ মেয়াদী মহাকাশ ভ্রমণের প্রাথমিক খাদ্য হিসেবে চাষাবাদের প্রস্তাব করত। অপরদিকে খাদ্য ও পুষ্টি বিশেষজ্ঞরা স্পাইরুলিনাকে সুপার ফুড হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন এবং যা দিন দিন ব্যাপক জনপ্রিয়তা পাচ্ছে। বিশ্ব খাদ্য নিরাপত্তায় এই শৈবাল সময় উপযোগী ভূমিকা অপরিসীম।

লেখক: মোঃ জিয়াউর রহমান ভূঁঞা (পিন্টু), সহকারী অধ্যাপক, উদ্ভিদ রোগতত্ত্ব বিভাগ
শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় , ঢাকা

Blogger দ্বারা পরিচালিত.