-->

বাংলাদেশে বিজ্ঞান প্রসারের উজ্জল তারকা আসিফ


২০০৯ সালের মাঝামাঝি সময়ের কথা। একটি পত্রিকা মারফত বিজ্ঞান বক্তা আসিফের সাথে দেখা। নির্দিষ্ট একটি দিনের দুপুরের দিকে আমাকে সোবহানবাগ মসজিদের পাশে থাকতে বলা হল। দাড়িয়ে আছি হঠাৎ ফোন বেজে উঠল। ধরতে ফোনটা কেটে গেল,একজন এসে বললেন-রফিকুল? বললাম হ্যা। লোকটার কাঁধে একটা ব্যাগ,ঢিলেঢালা শার্ট, সাধারণ ঢিলেঢালা প্যান্ট ও সাধারণ জুতা। কাপড়চোপড় তেমন উজ্জ্বল নয়, অনেকটা ময়লাটে। বললেন রিক্সায় উঠুন। তারপাশে বসে আছি, ভাবছি আজ আসিফ স্যারের সাথে দেখা হবে। যাইহোক ২০-২৫ মিনিটের মধ্যে ধানমন্ডির এক বাসায় উঠলাম। সরাসরি আমাকে একটি কক্ষে নিয়ে গেলেন। কোন খাট নেই,বিছানা পাতা,সামনে দুটো কম্পিউটার দুই দিকে বিশাল তাক-বই আর বই, মেঝেতে বই। আমার চোখতো ছানাবড়া,আবার চরম খুশি। স্বপ্নতো আমি এমনি দেখি- চারদিকে থাকবে বই আর বই, মাঝে একটা টেবিল, শুধু পড়ব পড়ব আর পড়ব। বইগুলো খুটিয়ে খুটিয়ে দেখলাম । আমিতো অবাক এত বই মানুষ কিভাবে পড়ে! লোকটি একবার এসে বললেন একটু অপেক্ষা করেন, ভাবলাম তাকে জিজ্ঞেস করি আসিফ স্যার কখন আসবেন! কিন্তু ভাবলাম এত বড় বিখ্যাত মানুষ তার সঙ্গে দেখা করার জন্য তো অপেক্ষা করাই যায়। যাই হোক কিছুক্ষণ পর সেই মানুষটিই রূমে আসলেন, আমার সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলেন। কথা বলছি কিন্তু শান্তি পাচ্ছি না কারণ আমিতো আসিফ স্যারকে দেখব, ওনাকে এত কথা বলে কি লাভ! এরপর লোকটি শুরু করলেন। বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্তে বক্তৃতা দেয়ার কথা। অনেক বক্তৃতার ঘটনা, তার স্বপ্ন, ভবিষ্যত পরিকল্পনা আমাকে বলছেন। অবাক হয়ে তাকিয়ে আছি-এই বিজ্ঞান বক্তা আসিফ। যাইহোক সেইতো পথ চলা। তারপর আজ ২০১৫ অর্থাৎ ছয় বছর আসিফ ভাইয়ের সাথে আছি। বিজ্ঞান নিয়ে তার সংস্পর্শে থাকা, তার উদ্যোমি পরিশ্রমী কিছু বিজ্ঞান কর্মীর সাথে কাজ করার সুযোগ হয়েছে। অসংখ্য বিজ্ঞান কর্মীকে সাথে নিয়ে বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছুটে বেড়িয়েছেন বিজ্ঞান বক্তা আসিফ। শিক্ষার্থীদের মাঝে বিজ্ঞানের বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরেছেন, তাদের কাছে বিজ্ঞানকে প্রমাণ করেছেন সহজবোধ্য ও আগ্রহের বিষয়। পাশাপাশি রচনা করেছেন বিজ্ঞান বিষয়ক অসংখ্য বই। বিজ্ঞান মনস্ক সমাজ গড়ার অগ্রপথিকদের মধ্যে একটি উজ্জ্বল নক্ষত্র বিজ্ঞান বক্তা আসিফ। বিজ্ঞান  প্রসারে কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ বাংলা একাডেমি পরিচালিত হালিমা শরফুদ্দীন বিজ্ঞান পুরস্কার পাচ্ছেন সাংবাদিক ও বিজ্ঞান বক্তা আসিফ।  প্রখ্যাত শিক্ষাবিদ, বিজ্ঞান লেখক, বিজ্ঞান কর্মী আবদুল্লাহ আল মুতী শরফুদ্দীনের মা হালিমা শরফুদ্দীনের নামে বাংলা একাডেমি  প্রতি বছর এ পুরস্কার দিয়ে থাকে। আগামী ২৬ ডিসেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে বিজ্ঞান বক্তা আসিফের হাতে এ পুরস্কার তুলে দেওয়া হবে। বাংলা একাডেমি এই পুরস্কারের মাধ্যমে বিজ্ঞান  প্রসারের এক অ অগ্রপথিককে সম্মানিত করার পাশাপাশি সারাদেশে বিজ্ঞান  প্রসারের কাজে নিয়োজিত সকলকে উৎসাহিত করছে। বাংলাদেশের সকল বিজ্ঞান কর্মীর পক্ষ থেকে বিজ্ঞান বক্তা আসিফকে অভিনন্দন। পরিশেষে আপনি আমাদের মাঝে থাকুন দীর্ঘ বছর, বাংলার প্রান্তে প্রান্তে আপনার অনুপ্রেরণায় ছড়িয়ে পড়ুক নতুন  প্রজন্ম। বিজ্ঞান আন্দোলনের গতি ত্বরান্বিত হোক, গড়ে উঠুক একটি বিজ্ঞান মনস্ক ও বুদ্ধিদীপ্ত সমাজ । 

রফিকুল ইসলাম, বিজ্ঞান কর্মী

এই লেখাটির প্রকাশ করে প্রিয়.কম.
লিংক- https://www.priyo.com/articles/%E0%A6%AC%E0%A6%BF%E0%A6%9C%E0%A7%8D%E0%A6%9E%E0%A6%BE%E0%A6%A8-%E0%A6%AA%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A6%B8%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A7%87%E0%A6%B0-%E0%A6%8F%E0%A6%95-%E0%A6%89%E0%A6%9C%E0%A7%8D%E0%A6%9C%E0%A7%8D%E0%A6%AC%E0%A6%B2-%E0%A6%A8%E0%A6%95%E0%A7%8D%E0%A6%B7%E0%A6%A4%E0%A7%8D%E0%A6%B0-%E0%A6%AC%E0%A6%BF%E0%A6%9C%E0%A7%8D%E0%A6%9E%E0%A6%BE%E0%A6%A8-%E0%A6%AC%E0%A6%95%E0%A7%8D%E0%A6%A4%E0%A6%BE-%E0%A6%86%E0%A6%B8%E0%A6%BF%E0%A6%AB
Blogger দ্বারা পরিচালিত.